Sequence of the previous note.........
Date: 11-10-2011, 7:08 am
Author: Unknown(A Sister)
Source: Collected
আউ’যুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বনির রাজীম।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
নোটের টাইটেল দেখে মজা পেয়েছেন তাইনা। আমিও মজা পেয়েছি। :) তবে টাইটেল এর জন্য না, এই টাইটেল দেয়ার পেছনের ঘটনার জন্য। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারি কিন্তু তারপরও অন্যের ঘাড়ে ডিরেক্টলি, ইন্ডিরেক্টলি অথবার রিমোটলি দোষটা চাপাতে পারলে একটা হাঁফ ছাড়ি। হি হি। কিন্তু নিজে বদলাবো? উহু, কক্ষনো না।
ব্যপারটা অনেকটা এরকম যে, আমি কাউকে একটু পর চিমটি কাটছি, ভেংচি কাটছি ইত্যাদি ইত্যাদি।কিন্তু সে যদি উল্টো কিছু বলে তাহলেই হয়েছে। :)
ঠিক এরকম সিচুয়েশন আমি প্রায়ই ফেস করি যখন আমার বোনদের পর্দার কথা বোঝাতে যাই।
তারা অনেকেই অনেক কথা বলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘুরে ফিরে এগুলোই বলে---
১। কুর’আনে ছেলেদের পর্দার কথা আগে বলা হইসে।
২। তাইলে ৪/৫ বছরের বাচ্চা রেপ হয় কেন?
৩। ছেলেরা খারাপ,মেয়েদের সম্মান করে না।
৪। সব ছেলে এক রকম না।
৫। বোরকা পরা মেয়ারা তলে তলে অনেক খেমটা দেখায়।
এই সব যুক্তি একটা কথাতেই ঊড়িয়ে দেয়া যেত----
“তুমি কি আল্লাহ্র চাইতে বেশি বোঝ?”
কিন্তু ব্যাপারটা যদি এতেই রফা দফা হয়ে যেত, আর আমার বোনরা আল্লাহ্র কথা স্মরণ করে পড়িমরি করে নিজেদের পর্দার ব্যপারে ব্যস্ত হয়ে ঊঠত তাহলে তো কোন কথাই ছিল না। কিন্তু যারা আল্লাহকে শুধু ইসলাম শিক্ষা বইয়ের পাতায় চিনেছে , উপলব্ধি করে নি তাদের কাছে এমন আশা করা যায় না। তাই আমি তাদের কথার প্রেক্ষিতে কিছু ব্যাখা দাঁড় করানোর চেষ্টা করব,ইনশা’আল্লাহ।
তবে সবার আগে আমি একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই। একজন মুসলমান নিজেকে আত্নসমর্পন করে কম্লিটিলি। সে যদি ইসলামের কোন বিষয়কে খারাপ মনে করে/মনে করে যে দরকার নেই , সে ইসলামের গন্ডী থেকে বের হয় যায়। আর যদি এটা জানে যে সে যা করছে সেটা ভুল ,ইসলাম যা বলেছে ঠিক বলেছে,কিন্তু কোন কারনে তা পালন করতে পারছেনা, তবে সে গুনাহগার হবে কিন্তু ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে যাবে না।
এজন্য আপুরা, যারা মনে করেন যে পর্দার দরকার নেই/ এটা ভাল কিছু না তবে আপনারা চিন্তা করে দেখুন আপনারা কোন অবস্থানে আছেন। আপনি যদি মেনেই নিয়ে থাকেন যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন ইলাহ নেই তবে আপনার এই মানসিকতা আপনার বিশ্বাসকে কন্টাডিক্ট করছে। আপনি যদি আসলেই বিশ্বাস করেন যে আল্লাহ আপনার স্রষ্টা তবে এটাও আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, আপনার জন্য কি ভাল,কি মন্দ সেটা তাঁর থেকে বেশি কেউ জানে না। আর আপনার রব ন্যায়পরায়ণ, তিনি কারো সাথে অন্যায় করেন না। সুতরাং আপনি যদি মনে করেন মেয়েদের পর্দার ভেতরে থাকার আদেশ দিয়ে তাকে ছোট করা হয়েছে/ তাকে বন্দী করা হয়েছে/ তার অধিকার খর্ব করা হয়েছে তাহলে আপনি আল্লাহ্র সম্পর্কে বাজে ধারনা এবং মিথ্যা ধারণা পোষণ করলেন। আর এগুলো মুখে বললে তাঁর নামে মিথ্যা আরোপ করলেন।
এবার আসি আপনাদের অভিযোগগুলোর পর্যালোচনায়।
১। কুর’আনের ছেলেদের পর্দার কথা আগে বলা হইসে
----এক্কেবারে ১০০% ঠিক কথা। কোন পুরুষের অধিকার নাই আপনার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকার। তাই আপনি লক্ষ্য করলে দেখবে যে , যেই ভাইয়েরা কুর’আন মেনে চলেন/ সুস্থ বিবেক আছে তারা কোন গায়ের মাহরাম নারীর দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন না। [mind it,আমি বলেছি যারা কুর’আন মেনে চলে,এটা বলিনি যে যারা কুর’আন পড়ে।]
কিন্তু আপু, এই আয়াতে পরের আয়াতেই আমাদের পর্দার কথা বলা হয়েছে,কিভাবে করতে হবে তাও বলা হয়েছে এবং আয়াতটি বেশ লম্বা। আগের আয়াতে পুরুষদের বলা হয়েছে দৃষ্টি সংযত করা ও যৌনাংগ হেফাযত করার কথা ,পরের আয়াতে নারীদের এর পাশাপাশি আরো অ্যাডিশনাল নির্দেশিকা দেয়া আছে---
“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” সূরা নূরঃ৩১
আর আপু, ছেলেরা পর্দা না করলে আল্লাহ কি আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন ,”বল, ওই ছেলে কেন পর্দা করেনি?” দুনিয়ার সব মেয়ের দিকে তারা কুদৃষ্টি নিয়ে তাকালেও আল্লাহ কি আপনার কাছে তার জবাব চাইবেন?
তাই, দয়া করে পুরুষদের দৃষ্টির সংযম নিয়ে আপনার এত মাথা ব্যাথার দরকার নাই। আপনি আপনার টা করেন। আল্লাহ্ আপনাকে আপনার কর্তব্য সম্পর্কেই জিজ্ঞেস করবেন।
আর যদি ধরেই নেই আপনি ভাইদের আসংযমি দৃষ্টির কারনে তাদের শাস্তি হবে এই জন্যই কন্সার্ন(?),তাহলে দয়া করে নিজেকে প্রপারলি আবৃত করে তাদের দৃষ্টি সংযত করতে সাহায্য করুন।
২। তাইলে ৪/৫ বছরের বাচ্চা রেপ হয় কেন?
শুনে মনে হয় যেন মেজরিটি পুরুষরাই বাচ্চাদের রেপ করে। যেকোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষই বুঝবে যে এরা বিকৃত রুচির পিওর শয়তান। আল্লাহ এদের কঠিন শাস্তি দিন, দুনিয়া ও আখিরাতে। আমীন।
[তবে হ্যাঁ, অনেকেই ১২/১৩ বছরের মেয়েদেরকেও বাচ্চাই মনে করেন। তারা শারীরিক ভাবে বেশির ভাগ ক্ষত্রেই কিন্তু বাচ্চা থাকেনা। সুতরাং তাদেরকে শকূনদের থেকে আড়াল করে রাখাই আমাদের কর্তব্য। শকূনদের গায়ে তো আর সিল মোহর মারা থাকে না। তাই বোনেরা , সাবধান! আপনার ১২/১৩ বছরের ছোট বোন/ ভাতিজি/ভাগনিকে সাবধানে রাখুন। এই বয়সের মেয়েরা বেশিরিভাগ ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। আর এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে নিকট আত্নীয়, যেমনঃ চাচাত/মামাত/খাত ভাই, খালু/ফুফা , দুঃসম্পর্কের মামা/চাচা এরাই এই ধরনের জঘন্য কাজ করে থাকে। আল্লাহ্ হেফাযত করুন]
৩। ছেলেরা খারাপ,মেয়েদের সম্মান করে না।
আপু, একটা ছেলে যদি একটা মেয়েকে দেখে আকর্ষন বোধ করে এতে খারাপ কিছু নাই। এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই আমার আগের নোট পড়ে মনে করেছেন ,”They are created like this” এটা বলে আমি বোঝাতে চেয়েছি পুরুষ মানুষ কামলিপ্সু পশু। বরং আমি বোঝাতে চেয়েছি মেয়দের exposure যে পুরুষদের desire initiate করে এটাই স্বাভাবিক, এটাই ন্যাচারাল।
এখন দেখুন আপু, আপনি যদি একটা ছেলের সামনে তার ডিসায়র জাগায় এমন ভাবে নিজেকে প্রেসেন্ট করেন তাহলে নিজের ডিসায়ারকে ছাপিয়ে আপনার প্রতি সম্মান যে তার আসবেনা এটাই স্বাভাবিক(বেশির ভাগ ক্ষেত্রে)। আর এটা প্রুভড ফ্যাক্ট যে sexual desire is one of the strongest desires. আচ্ছা বলেন তো, একটা রোযাদার মানুষের সামনে আপনি এক প্লেট গরম বিরিয়ানি নিয়ে বসে তার সামনে যদি রোযাদারের না খেয়ে থাকার সওয়াব নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন তবে সে আপনার কথায় কতটুকু কান দেবে?
আমরা যদি চাই তারা আমাদের সম্মান করুক তবে সেই পরিবেশ আমাদেরকেই সৃষ্টি করতে হবে।
৪। সব ছেলে এক রকম না।
Exactly,সত্যি কথা। কিন্তু আপনার কাছে কি “Intention detector” type কোন ডিভাইস আছে? আপনি কি জানেন কার মনে কি চলছে?
৫। বোরকা পরা মেয়ারা তলে তলে অনেক খেমটা দেখায়।
কিন্তু খেমটা দেখায় তো মেয়েরা। বোরকার কি হাত পা আছে নাকি যে নিজে নিজে খেমটা দেখাবে? এ যেন এরকম, কেউ চাকু দিয়ে খুন করেছে, কেউ কারো ঘরে আগুন দিয়েছে, কেউ ইলেক্ট্রিক শক খেয়েছে এই জন্য দুনিয়ার কেউ চাকু ব্যাবহার করতে পারবেনা, কেউ আগুন ব্যাবহার করতে পারবেনা, আর ইলেক্ট্রিসিটি ব্যাবহার তো এক্কেবারেই না। ভেবে দেখুন তো কেমন অচলাবস্থা হবে দুনিয়ার। ঠিক এই ধরনের মানসিকতার জন্য আমাদের মূল্যবোধের একই অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
আপনি যদি মানেন যে কিছু চরিত্রহীন মেয়ে বোরকার অপব্যবহার করছে তাহলে এটা আমার এবং আপনার দায়িত্ব প্রপারলি পর্দা করে এটা নিশ্চিত করা যে , দোষ বোরকার না। দোষ বোরকার ভিতরের মানুষটার।
যখন আমার সৃষ্টিকর্তা আমার জন্য ট্রেন্ড সেট করে দিয়েছেন তখন আমি মানুষের বানানো ট্রেন্ড কেন অ্যাক্সেপ্ট করব? আমি আল্লাহ্র দাস না মানুষের?
আপু, আমি জানি এত কিছু বলার পরেও আপনারা হয়তো চিন্তা করবেন কিভাবে শুরু করবেন, অন্যরা কি বলবে, আপনি তৈরি কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি জানি আপনারা অনেকেই ফীল করেন পর্দা করা দরকার, হয়ত অনেক কারনেই পারেন না। সংশয়, ভয় আরো অনেক কিছুই থাকতে পারে। কিন্তু জানেন ---
EXCEPT ALLAAH
If I deny to stop, no one can resist me.
If I deny to fear, no one can make me afraid.
If I deny to hear, no one can make me listen.
If I deny to bow down, no one can humiliate me.
I deny being the entertainment of the eyes of men.
I DENY.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন